উৎপাদনমুখী শিল্পের জন্য আত্মঘাতী
১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৫ এএম
ব্যবসার খরচ কয়েকগুণ বাড়বে-ডিসিসিআই সভাপতি :: কর্মসংস্থানে বড় ধরনের ধস নামবে -কামরান টি রহমান :: ভ্যাটের বাড়তি বোঝা বহন করা অত্যন্ত কঠিন হবে -বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি :: বিগত সরকারের সাগরচুরির ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে শিল্পখাতে বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন খাতে ট্যাক্স বাড়াতে হচ্ছে -বাণিজ্য উপদেষ্টা
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ-গ্যাস সরবরাহের প্রতিশ্রæতি দিয়ে দফায় দফায় বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়ানোর কারণে অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান অস্তিত্ব সঙ্কটে রয়েছে; পট পরিবর্তনের পর অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু বন্ধের পথে। নতুন করে কোনো প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগে আসছে না। ঋণের সুদহার ইতোমধ্যে ১৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বিদেশি বিনিয়োগ নেই; বিদ্যুৎ,-গ্যাস সঙ্কটে স্থানীয় বিনিয়োগও বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে গ্যাসের দাম আড়াইগুণ বাড়ানোর প্রস্তাবকে উৎপাদন খাতের জন্য আত্মঘাতী ও হুমকি হিসেবে দেখছেন ব্যবসায়ীরা। ২০১৯ সাল থেকে দ্রæত এবং ঘনঘন গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি হচ্ছে। এই ধারাবাহিকতায় ২০২২ এর জুনে ১৫ দশমিক ৫২ শতাংশ, ২০২৩ সালের ফেব্রæয়ারিতে ৮৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, ২০২৪ এর ফেব্রæয়ারিতে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং মে মাসে ২ দশমিক ৪৪ বাড়ানো হয়। সে সময়ে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাসের প্রতিশ্রæতি, শিল্পের প্রতিষ্ঠানের চাহিদা, পণ্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণের বাধ্যবাধকতা এবং সর্বোপরি অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে শিল্প মালিকরা মূল্যবৃদ্ধি মেনে নেন। যদিও এ কারণে উৎপাদনের ব্যয় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে দেশের অনেক শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়েছে।
কিছু কারখানা বন্ধের পথে রয়েছে। এর মধ্যেই গত ৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কাছে শিল্প ও ক্যাপটিভের গ্যাসের প্রতি ইউনিটের দাম যথাক্রমে ৩০ ও ৩১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা করার প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)। নিত্যদিনের খরচ চালাতেই হিমশিম খাচ্ছে মানুষ। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশ হয়। এর আগের মাসে ছিল ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, অক্টোবর ও নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের বেশি ছিল। প্রায় দুই বছর ধরে ১০ শতাংশের কাছাকাছি মূল্যস্ফীতি এবং সব কিছুর দাম ঊর্ধ্বমুখী। এর মধ্যে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম, বেড়েছে বিদ্যুৎ ও ক্যাপটিভ খাতে গ্যাসের মূল্যও। সামনে রমজান আসন্ন। রোজার আগেই ত্রাহি অবস্থা মানুষের। রমজান উপলক্ষে ইতোমধ্যে অধিক মূল্যে আমদানি করা হয়েছে, যা আগামীতে বাড়তি দামে গ্রাহকদের কিনতে হবে। এদিকে গত রোববার গভর্নর ড. অহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে দেখা করে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেছেন, চড়া সুদহার, জ্বালানি সঙ্কট, সেই সঙ্গে গ্যাস-বিদ্যুতের মূল আবারো বৃদ্ধির পাঁয়তারার খবরে কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ব্যবসায়ীদের। তাদের দাবি, দেশে এখন ব্যবসার পরিবেশ নেই, ফলে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে এক্সিট পলিসি চাইলেন তিনি। একই সঙ্গে এপ্রিলে খেলাপি ঋণের নতুন নিয়ম চালু হলে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। তার উপর নতুন করে ভ্যাট আরোপ, শ্রমিকের বেতন-ভাতা বৃদ্ধিকে ব্যবসার অন্তরায় হিসেবে দেখছেন তিনি।
অপরদিকে আইএমএফের চাপে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভ্যাট নিবন্ধনের সীমা তিন কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও লেনদেন কর ৩০ লাখ টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে। বিস্কুট, মোবাইলফোন ব্যবহার, ইন্টারনেট বিল, তৈরি পোশাক, সেলাই ও রেস্তোরাঁয় খাবারসহ শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে রাজস্ব বোর্ড। এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের মাঝামাঝি সরকারের এই উদ্যোগ রাজস্ব আদায় বাড়াবে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চার দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার ঋণের কর-রাজস্ব সংক্রান্ত শর্ত পূরণ হবে। আইএমএফের শর্ত পূরণ করতে এনবিআরের আত্মঘাতী ও জনবিরোধী সিদ্ধান্তে দেশের মানুষের আরো ত্রাহি পরিস্থিতির মুখে পড়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিদ্যুৎ-গ্যাসসহ জ্বালানির দাম বৃদ্ধির কারণে নি¤œ ও মধ্য আয়ের মানুষ আরো চাপে পড়বে। বাড়বে শিল্পের উৎপাদন খরচ। কৃষি ও পরিবহন খাতের ব্যয়ও বাড়বে। এতে মূল্যস্ফীতি আরো বেড়ে যাবে। বাধাগ্রস্ত হবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গ্যাস সঙ্কটের কারণে তারা উৎপাদন ধরে রাখতে পারছেন না। রফতানি আদেশ বাতিল হচ্ছে। এর মধ্যে কিছু দিন পরপর বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ালে খরচ আরো বেড়ে যাবে। কারখানা বন্ধ করে দিতে হবে। নতুন বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও রফতানি বাধাগ্রস্ত হবে। তাদের মতে, গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দ্বিগুণের বেশি করার প্রস্তাব গৃহীত হলে উৎপাদন ব্যয় বাড়বে; তাতে পণ্যের দাম বেড়ে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। একই সঙ্গে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারাবে রফতানি খাত। স্থানীয় পণ্যের বাজার কমে আসবে, আমদানির প্রবণতা বাড়বে। আমদানি-রফতানির এই বিরূপ প্রভাব ডলারের বাজার অস্থির করে তুলবে, যা বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভকে চাপে ফেলেবে। এছাড়া উচ্চ ব্যয়ে উৎপাদন বজায় রাখতে গিয়ে নতুন ও উদীয়মান শিল্পপ্রতিষ্ঠান বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়বে। সঙ্কুচিত হয়ে আসবে শিল্প খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগও। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সামগ্রিক অর্থনীতির অগ্রগতির জন্য সরকারের গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। অবশ্য বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন সম্প্রতি বলেছেন, বিগত সরকারের সাগরচুরির খেসারত দিতে হচ্ছে দেশের মানুষকে। এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে শিল্প খাতে বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন খাতের ট্যাক্স বাড়াতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক ভ‚ঁইয়া বলেন, করোনার পর থেকেই ব্যবসায়ীরা বিক্রি নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। ক্রেতারা দীর্ঘদিন ধরে ভ্যাটের বোঝার পাশাপাশি বাড়তি দামের চাপে আছেন। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে মানুষের প্রকৃত আয় কমেছে। মূল্যস্ফীতি অস্বাভাবিকভাবে বেশি। এই প্রেক্ষাপটে সরকারের এই সিদ্ধান্ত দিনমজুর থেকে শুরু করে মধ্যম আয়ের মানুষ সবার ওপর আরো বেশি চাপ সৃষ্টি করবে। অনেকের পক্ষে ভ্যাটের বাড়তি বোঝা বহন করা অত্যন্ত কঠিন হবে বলে মনে করেন তিনি। এছাড়া বিদ্যুৎ খাতে বেসরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে নীতি পরিবর্তন করা হয়েছে। এতদিন বেসরকারি খাতের সব বিদ্যুৎ প্রকল্পে ‘বাস্তবায়ন চুক্তি বা ইম্পলিমেন্ট এগ্রিমেন্ট (আইএ)’ করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর বর্তমান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান তা বাতিল করেন। স¤প্রতি ১০ সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য আহŸান করা দরপত্রে এটি বাতিল করা হয়। এর ফলে বিদ্যুৎ খাতে সব ধরনের বিনিয়োগকারী নিরুসাহিত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বিশেষ এই খাতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। পাশাপাশি বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বাড়ার সঙ্গে গ্রাহক পর্যায়ে দামও বাড়বে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী নেতা বলেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এমনিতেই গ্যাস-বিদ্যুৎসহ নানাবিধ সঙ্কটে আছে। ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়লে সঙ্কট বাড়বে। ব্যবসায়ীরা হয় কর ফাঁকি দেবেন নতুবা পণ্য ও সেবার দাম বাড়িয়ে দেবেন। দাম বাড়ানো হলে ক্রেতাদের চাহিদা আরো কমবে। হঠাৎ করে ভ্যাটের হার বাড়ানো হতাশাজনক। আইএমএফের সুপারিশ মেনে সরকার অর্থবছরের মাঝামাঝি কর আরোপ করে জনগণের ওপর বোঝা বাড়িয়ে দিয়েছে। অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় নিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ও মডেল গ্রæপের এমডি মাসুদুজ্জামান বলেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হলো বাস্তবতা বহিভর্‚ত সিদ্ধান্ত। যারা এই প্রস্তাব করছে, কার সাথে আলোচনা করে করছে, কি বুঝে করছে, আদো আলোচনায় কোনো ব্যবসায়ী ছিল কি-না জানি না। এটি একটি অবাস্তব চিন্তাধারা মনে হয়েছে। ব্যবসায়ীরা শুধু ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, এক কথায় ব্যবসায়ীরা সর্বস্বান্ত হওয়ার উপক্রম এটি।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকিন আহমেদ বলেছেন, অতীতে কখনোই গ্যাসের দাম একবারে এতটা বাড়ানো হয়নি। এবার যখন গ্যাসের দাম একবারে দ্বিগুণেরও বেশি করার প্রস্তাব এলো, সে বিষয়ে আমাদের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে পেট্রোবাংলাসহ সরকারের কোনো পক্ষ আলোচনাও করল না। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব অনেকগুলো শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে ব্যবসার খরচ কয়েকগুণ বাড়বে।
জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী ব্যবসা-বাণিজ্যের স্থবিরতার কথা উল্লেখ করে এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি সামগ্রিক বিনিয়োগ পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত করবে। নতুন শিল্প স্থাপনের সম্ভাবনা কমাবে এবং বিদ্যমান বিনিয়োগকারীদের ব্যবসা পরিচালনায় বাধা সৃষ্টি করবে। সম্প্রতি এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক এক প্রতিক্রিয়া জানায় ডিসিসিআই। তাতে বলা হয়, রফতানিমুখী শিল্পের উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাবে, যা আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতাকে দুর্বল করে তুলবে। স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ কমাবে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২২ সালে শিল্প খাতের জন্য গ্যাসের দাম ১৫০ থেকে ১৭৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। গত বছরও গ্যাসের দাম কিছুটা বাড়ানো হয়। নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবে উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরা; নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত না করেই দাম দ্বিগুণের বেশি বৃদ্ধির প্রস্তাব দেশের শিল্প খাতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করে ডিসিসিআই সভাপতি তাকসিন আহমেদ।
এদিকে বিদ্যুৎ খাতে বেসরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে নীতি পরিবর্তন করা হয়েছে। এতদিন বেসরকারি খাতের সব বিদ্যুৎ প্রকল্পে ‘বাস্তবায়ন চুক্তি বা ইম্পলিমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট (আইএ)’ করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর বর্তমান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান তা বাতিল করেন। এর ফলে বিদ্যুৎ খাতে সব ধরনের বিনিয়োগকারী নিরুসাহিত হবে বলে আশঙ্কা কর হচ্ছে। একই সঙ্গে বিশেষ এই খাতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। পাশাপাশি বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বাড়ার সঙ্গে গ্রাহক পর্যায়ে দামও বাড়বে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে বাস্তবায়নকারী কোম্পানির ব্যয় বেড়ে যাবে। এই বাড়তি ব্যয় উৎপাদন খরচের সঙ্গে যোগ হয়ে গ্রাহকের কাঁধে পড়বে।
বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসএমএ) পক্ষ থেকেও উদ্বেগ জানানো হয়েছে। টেক্সটাইল মিলগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের দাবি জানিয়ে আসছে বিটিএমএ। সম্প্রতি বিএসএমএর সভাপতি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ইস্পাত খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন গ্যাসনির্ভর। গ্যাসের দাম বাড়লে রডসহ এমএস পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাবে। দেশের উদীয়মান ইস্পাত খাতের প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে এবং স্থানীয় বাজার আমদানিনির্ভর হয়ে পড়বে। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়বে।
এদিকে দিনে ঘাটতি থাকা ১০০ থেকে ১২০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ বাড়াতে গ্যাসের উৎপাদন ও এলএনজি আমদানি বাড়াতে বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলে প্রস্তাবে দাবি করেছে পেট্রোবাংলা। পেট্রোবাংলা দুটি উৎস থেকে গ্যাস সংগ্রহ করে। দেশি গ্যাস কিনে নেয় বিভিন্ন কোম্পানি থেকে। এতে প্রতি ইউনিটে তাদের গড়ে খরচ হয় ছয় টাকা ৭ পয়সা। কিন্তু এলএনজি আমদানিতে খরচ হচ্ছে ৭৫ টাকার বেশি। এ অবস্থায় সংস্থাটি বলছে, তারা লোকসানে আছে; তবে সরকার আর তাদের ভর্তুকি দিতে রাজি নয়। এ কারণে পেট্রোবাংলা এলএনজি আমদানির খরচ সবটাই শিল্পের ওপর চাপাতে চাইছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান তানভিরুর রহমান বলেন, গ্যাসের সঙ্কট চলছে অনেক দিন ধরেই। এখন গ্যাস আমদানিও করতে হচ্ছে। আমরা বুঝতে পারছি গ্যাসের দাম বাড়ানো দরকার। কিন্তু তাই বলে এক বারে দাম বাড়িয়ে দ্বিগুণ, ৩০-৩২ টাকা থেকে ৭০-৭২ টাকা করে ফেলবে প্রতি ইউনিট। এটি খুবই অযৌক্তিক হবে। অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান আছে যেখানে সরাসরি গ্যাসের অনেক ব্যবহার রয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠান একেবারে বসে যাবে। শিল্প খাতে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে কর্মসংস্থানে বড় ধরনের ধস নামবে বলে আশঙ্কা কামরান টি রহমানের।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বেগমগঞ্জে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ আলোচনা সভা ও পুরুষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠিত
ফতুল্লায় শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ
টানা ৪০ রাতের পর সূর্যোদয়
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর গ্রেফতার
বগুড়ার নন্দীগ্রামে তারুণ্যের ফুটবল প্রতিযোগিতার উৎসব
দেশে অবস্থানরত অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের আবারও সতর্ক করল সরকার
কালীগঞ্জে জাতীয় বিজ্ঞান মেলার পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী
বাউফলে উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়কের বহিষ্কার দাবি
স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের খবর জানালেন জয়
খালেদা জিয়া অনেকটা ভালো আছেন : মির্জা ফখরুল
সুস্থ প্রতিযোগিতা না থাকলে গণমাধ্যমের স্বাভাবিক বিকাশ হবেনা- কমিশন প্রধান
সিংগাইরে স্থানীয় সরকার সংস্কার বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
মালি আছে, বাগান নেই
পাকিস্তান থেকে চাল আমদানি করবে বাংলাদেশ
নতুন খেলোয়াড় চান গুয়ার্দিওলা
এস আলমের ৬৮ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ, জব্দ ১৬ সম্পদ
সিলেটসহ দেশের পাথর ও বালু মহাল নিয়ে সরকারের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত
দৌলতপুরে নগদের মার্কেটিং অফিসারকে কুপিয়ে জখম
গোলের সুযোগ নষ্ট, হাভার্টজের পরিবারকে হত্যার হুমকি
ইসলামী আন্দোলনের আয়োজনে ভোলা জেলার উন্নয়ন শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত